বিষয়: অতীত ও ঐতিহ্য
অধ্যায় ৬: জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক বিকাশ (প্রকল্প নোটস)
মূল ধারণা ও প্রশ্নাবলী
১. ‘জাতীয়তাবাদ’ বলতে কী বোঝো?
উত্তর: জাতীয়তাবাদ হলো একটি রাজনৈতিক ও ভাবগত ধারণা। যখন কোনো জনগোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস বা ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে একটি ঐক্য অনুভব করে এবং সেই ঐক্যের ভিত্তিতে নিজেদের একটি ‘জাতি’ (Nation) হিসেবে কল্পনা করে, তখন তাকে জাতীয়তাবাদ বলা হয়। এই భాবনা থেকেই একটি জাতি নিজেদের শাসনভার নিজেদের হাতে তুলে নেওয়ার বা স্বশাসনের দাবি জানায়।
২. ঊনবিংশ শতকের ‘সভা’ ও ‘সমিতি’-র যুগের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: ঊনবিংশ শতকে ভারতে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক সংগঠনগুলিকে দুটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়:
- সভা (১৮৫০-এর দশক): প্রথম দিকের সংগঠনগুলি (যেমন – ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন) ছিল মূলত উচ্চবিত্ত, জমিদার ও অভিজাতদের দ্বারা পরিচালিত। এদের আবেদন-নিবেদনের মূল লক্ষ্য ছিল নিজেদের শ্রেণির স্বার্থরক্ষা করা। এগুলি ছিল মূলত ‘গোষ্ঠীস্বার্থ’-কেন্দ্রিক।
- সমিতি (১৮৭০-এর দশক): পরবর্তীকালে গড়ে ওঠা সংগঠনগুলি (যেমন – পুনা সার্বজনিক সভা, ভারত সভা) ছিল তুলনামূলকভাবে বেশি গণমুখী। এই সমিতিগুলিতে মধ্যবিত্ত শ্রেণি, শিক্ষিত মানুষ এবং কখনও কখনও কৃষকদেরও যুক্ত করার চেষ্টা করা হয়। এদের লক্ষ্য ছিল বৃহত্তর ‘জাতীয় স্বার্থ’-এর পক্ষে জনমত গঠন করা।
৩. ‘ভারত সভা’ (ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন) কে, কবে এবং কেন প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:
- কে: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দমোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রীর মতো নেতারা।
- কবে: ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে, কলকাতায়।
প্রতিষ্ঠার কারণ (উদ্দেশ্য):
- সারা ভারতে একটি শক্তিশালী জনমত গঠন করা।
- ধর্ম-বর্ণ-অঞ্চল নির্বিশেষে ভারতীয়দের রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ করা।
- হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা।
- রাজনৈতিক দাবিদাওয়ার ভিত্তিতে সাধারণ মানুষকে, বিশেষত মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে, একত্রিত করা।
এটিই ছিল ভারতের প্রথম সর্বভারতীয় রাজনৈতিক সমিতি।
৪. ‘ইলবার্ট বিল’ বিতর্ক (১৮৮৩) কী ছিল? এর গুরুত্ব কী?
উত্তর:
ঘটনা: গভর্নর-জেনারেল লর্ড রিপনের আইন সচিব কোর্টনি ইলবার্ট একটি বিল বা আইনের খসড়া তৈরি করেন। এই বিলে বলা হয় যে, ভারতীয় বিচারপতিরাও ইউরোপীয়দের (শ্বেতাঙ্গ) বিচার করতে পারবেন। এর আগে পর্যন্ত এই অধিকার ভারতীয় বিচারপতিদের ছিল না।
বিতর্ক: এই বিলের বিরুদ্ধে ভারতে বসবাসকারী ইউরোপীয়রা তীব্র আন্দোলন শুরু করে। তারা দাবি করে যে, ‘হীন’ ভারতীয়দের হাতে ‘উচ্চ’ ইউরোপীয়দের বিচার হতে পারে না। এই বর্ণবিদ্বেষী আন্দোলনের চাপে ব্রিটিশ সরকার বিলটি প্রত্যাহার করে নেয় এবং ভারতীয় বিচারপতিদের ক্ষমতা খর্ব করা হয়।
গুরুত্ব:
- এই ঘটনা ভারতীয়দের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে, ব্রিটিশ শাসনে ভারতীয়দের কোনো সম্মান বা প্রকৃত ক্ষমতা নেই।
- ভারতীয়রা বুঝতে পারে যে, ইউরোপীয়রা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করলে সরকার দাবি মেনে নেয়।
- এর ফলেই ভারতীয়রা নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য একটি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক সংগঠন (জাতীয় কংগ্রেস) তৈরির প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভব করে।
৫. ভারতের জাতীয় কংগ্রেস (১৮৮৫) প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি কী ছিল?
উত্তর: ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে বোম্বাই শহরে অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউম নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিটিশ আমলার উদ্যোগে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রধান উদ্দেশ্যগুলি ছিল:
- ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের জাতীয়তাবাদী কর্মীদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও ঐক্য গড়ে তোলা।
- জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যের భాবনাকে শক্তিশালী করা।
- গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করা এবং সরকারের কাছে দাবি পেশ করা।
- শিক্ষিত ভারতীয়দের জন্য একটি সর্বভারতীয় আলোচনার মঞ্চ তৈরি করা।
৬. ‘সেফটি ভালভ’ (Safety Valve) বা ‘সুরক্ষা কপাট’ তত্ত্বটি কী?
উত্তর: এটি জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত একটি বিতর্কিত তত্ত্ব। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউম এবং লর্ড ডাফরিন (তৎকালীন গভর্নর-জেনারেল) চেয়েছিলেন যে, ভারতীয়দের মধ্যে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ জমছে, তা যেন হিংসাত্মক বিদ্রোহের আকারে ফেটে না পড়ে। তাই তাঁরা কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করে ভারতীয়দের একটি ‘নিয়মতান্ত্রিক’ প্রতিবাদের মঞ্চ তৈরি করে দেন, যাতে এই ক্ষোভগুলি আবেদন-নিবেদনের মাধ্যমে বেরিয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ, কংগ্রেসকে একটি ‘সেফটি ভালভ’ বা ‘সুরক্ষা কপাট’ হিসেবে ব্যবহার করে ব্রিটিশ শাসনকে রক্ষা করাই ছিল এর উদ্দেশ্য।
চিত্র: সেফটি ভালভ তত্ত্ব। এই তত্ত্বে কংগ্রেসকে ব্রিটিশ শাসন রক্ষার ‘সুরক্ষা কপাট’ বলা হয়।
৭. জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম পর্বের (১৮৮৫-১৯০৫) নেতাদের ‘নরমপন্থী’ বলা হয় কেন?
উত্তর: কংগ্রেসের প্রথম পর্বের নেতারা (যেমন – সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, দাদাভাই নৌরজি, গোপালকৃষ্ণ গোখলে) ব্রিটিশ শাসনের অবসান চাননি।
- তাঁরা ব্রিটিশ শাসনের সুফলগুলির (যেমন – পাশ্চাত্য শিক্ষা, আইনের শাসন) প্রতি আস্থাশীল ছিলেন।
- তাঁরা মনে করতেন, ব্রিটিশ শাসনের অধীনে থেকেই ভারতীয়দের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকারগুলি আদায় করা সম্ভব।
- তাঁদের প্রতিবাদের ভাষা ছিল অত্যন্ত নরম—মূলত আবেদন-নিবেদন, সভা-সমিতি এবং স্মারকলিপি প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
এই নরম বা আবেদন-নিবেদন ভিত্তিক রাজনীতির জন্যই তাঁদের ‘নরমপন্থী’ (Moderates) বলা হয়।
৮. ‘নরমপন্থী’ ও ‘চরমপন্থী’-দের মধ্যে প্রধান পার্থক্যগুলি কী ছিল?
উত্তর:
- লক্ষ্যগত পার্থক্য: নরমপন্থীরা ব্রিটিশ শাসনের অবসান চাননি, তাঁরা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মধ্যে থেকেই স্বায়ত্তশাসন বা স্বশাসনের দাবি করতেন। চরমপন্থীরা (যেমন – বাল গঙ্গাধর তিলক, লালা লাজপত রায়, বিপিনচন্দ্র পাল) ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে পূর্ণ ‘স্বরাজ’ (স্বাধীনতা) অর্জনে বিশ্বাসী ছিলেন।
- পদ্ধতিগত পার্থক্য: নরমপন্থীরা আবেদন-নিবেদন, স্মারকলিপি, নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পথে চলতেন। চরমপন্থীরা এই ‘রাজনৈতিক ভিক্ষাবৃত্তি’-র তীব্র বিরোধী ছিলেন; তাঁরা প্রত্যক্ষ আন্দোলন, বয়কট, স্বদেশী এবং নিষ্ক্রিয় প্রতিরোধের (Passive Resistance) মাধ্যমে দাবি আদায়ে বিশ্বাসী ছিলেন।
- সামাজিক ভিত্তি: নরমপন্থীদের ভিত্তি ছিল মূলত উচ্চবিত্ত ও শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে। চরমপন্থীরা এই আন্দোলনকে শিক্ষিত শ্রেণির বাইরে সাধারণ মানুষ, ছাত্র-যুব সমাজের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন।
৯. ‘অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ’ বলতে কী বোঝো? দুজন প্রধান প্রবক্তার নাম লেখো।
উত্তর: জাতীয় কংগ্রেসের কয়েকজন নরমপন্থী নেতা (যেমন – দাদাভাই নৌরজি, রমেশচন্দ্র দত্ত, মহাদেব গোবিন্দ রানাডে) তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে প্রমাণ করেন যে, ব্রিটিশ শাসন ভারতের অর্থনৈতিক উন্নতি নয়, বরং শোষণ ও দারিদ্র্যের মূল কারণ।
তাঁরা দেখান যে, ব্রিটিশরা ভারতের সম্পদ ব্রিটেনে পাচার করছে (‘সম্পদের বহির্গমন’), দেশীয় শিল্প ধ্বংস করছে (‘অবশিল্পায়ন’) এবং কৃষকদের ওপর চড়া কর বসাচ্ছে। ব্রিটিশ শাসনের এই অর্থনৈতিক শোষণের দিকটি তুলে ধরে যে জাতীয়তাবাদী মতবাদ গড়ে ওঠে, তাকেই ‘অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ’ বলে।
প্রধান প্রবক্তা: দাদাভাই নৌরজি এবং রমেশচন্দ্র দত্ত।
১০. ‘স্বদেশী আন্দোলন’ (১৯০৫-০৮) কেন শুরু হয়েছিল?
উত্তর: ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বড়লাট লর্ড কার্জন প্রশাসনিক সুবিধার অজুহাত দেখিয়ে বাংলা প্রদেশকে দুটি ভাগে (‘বঙ্গ’ ও ‘পূর্ববঙ্গ-আসাম’) ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেন (‘বঙ্গভঙ্গ’)। কিন্তু এর আসল উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি জাতির রাজনৈতিক ঐক্যকে এবং হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতিকে নষ্ট করা। এই বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদেই ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় ‘স্বদেশী আন্দোলন’ শুরু হয়।
১১. স্বদেশী আন্দোলনে ‘বয়কট’ ও ‘স্বদেশী’-র ধারণা দুটি কী ছিল?
উত্তর:
- বয়কট (Boycott): এর অর্থ হলো ‘বর্জন করা’। বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে আন্দোলনকারীরা সমস্ত বিদেশি (বিশেষত ব্রিটিশ) পণ্য, যেমন – কাপড়, লবণ, চিনি ইত্যাদি বর্জন করার ডাক দেন। পাশাপাশি, ব্রিটিশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আদালত ও সরকারি কাজকর্ম বর্জন করারও আহ্বান জানানো হয়। এটি ছিল একটি নেতিবাচক (Negative) প্রতিরোধ।
- স্বদেশী (Swadeshi): এর অর্থ হলো ‘নিজের দেশের’। বয়কটের পরিপূরক হিসেবে, বিদেশি পণ্য বর্জনের পাশাপাশি দেশীয় শিল্প, বস্ত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য দেশীয় সামগ্রী গ্রহণ ও ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়। এটি ছিল একটি ইতিবাচক (Positive) বা গঠনমূলক কর্মসূচি।
১২. স্বদেশী আন্দোলনের দুটি প্রধান সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করো।
উত্তর:
- কৃষক সমাজের অনুপস্থিতি: এই আন্দোলন মূলত শহরকেন্দ্রিক ছিল। জমিদারদের একাংশ এই আন্দোলনে যুক্ত থাকায় এবং কৃষকদের স্বার্থে কোনো সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি না থাকায়, বাংলার কৃষক সমাজ (বিশেষত মুসলিম কৃষকরা) এই আন্দোলন থেকে দূরে সরে ছিল।
- সাম্প্রদায়িক বিভাজন: ব্রিটিশ সরকারের ‘ভাগ করো ও শাসন করো’ নীতির ফলে এবং আন্দোলনের নেতাদের একাংশের হিন্দুধর্মীয় প্রতীক (যেমন – রাখিবন্ধন, কালীপূজা) ব্যবহারের ফলে মুসলিম সমাজের একটি বড় অংশ এই আন্দোলনকে ‘হিন্দুদের আন্দোলন’ বলে মনে করে এবং এর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
১৩. ‘মুসলিম লিগ’ (১৯০৬) কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?
উত্তর: স্বদেশী আন্দোলনের সময় মুসলিম সমাজের একাংশের মধ্যে এই ধারণা তৈরি হয় যে, জাতীয় কংগ্রেস মূলত হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষা করে। ব্রিটিশ সরকারও এই বিভাজনকে উস্কে দেয় (‘ভাগ করো ও শাসন করো’ নীতি)।ল>
এই পরিস্থিতিতে, ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে আগা খানের মতো উচ্চবিত্ত মুসলিম নেতারা নিজেদের রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় ‘সর্বভারতীয় মুসলিম লিগ’ প্রতিষ্ঠা করেন।
১৪. ‘সুরাট বিচ্ছেদ’ (১৯০৭) কী?
উত্তর: ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে সুরাটে জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে নরমপন্থী ও চরমপন্থী—এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে। চরমপন্থীরা চেয়েছিলেন স্বদেশী আন্দোলনকে বাংলার বাইরে সারা ভারতে ছড়িয়ে দিতে, কিন্তু নরমপন্থীরা তাতে রাজি ছিলেন না। এই মতপার্থক্যের জেরে কংগ্রেসে বিভাজন দেখা দেয় এবং চরমপন্থীদের কংগ্রেস থেকে বিতাড়িত করা হয়। এই ঘটনাই ‘সুরাট বিচ্ছেদ’ নামে পরিচিত।
১৫. ‘মরলে-মিন্টো’ সংস্কার আইন (১৯০৯) কী ছিল?
উত্তর: ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ভারত সচিব জন মরলে এবং গভর্নর-জেনারেল লর্ড মিন্টো একটি শাসন সংস্কার আইন প্রবর্তন করেন, যা ‘মরলে-মিন্টো সংস্কার আইন’ নামে পরিচিত।
গুরুত্ব: এই আইনের দ্বারা ভারতীয়দের কিছু সীমিত রাজনৈতিক অধিকার দেওয়া হলেও, এর সবচেয়ে ক্ষতিকর দিকটি ছিল ‘পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা’-র প্রবর্তন। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়, যেখানে কেবল মুসলিম প্রার্থীরাই দাঁড়াতে পারতেন এবং মুসলিম ভোটাররাই ভোট দিতে পারতেন। এই আইন ভারতের রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বীজ বপন করে দেয়।