অধ্যায়ের বিবরণ
ভূমিকা: জীবজগৎ
যাদের প্রাণ আছে, যারা খাবার খায়, শ্বাস নেয়, বড় হয় ও বংশবৃদ্ধি করে, তাদের জীব বলে। গাছপালা, পশুপাখি, মানুষ সবাই জীবজগতের অংশ।
উদ্ভিদ জগৎ
উদ্ভিদরা সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় নিজেদের খাদ্য তৈরি করে এবং পরিবেশকে অক্সিজেন দেয়। এরা বিরুৎ, গুল্ম, বৃক্ষ ও লতানো—এই চার প্রকারের হয়।
প্রাণী জগৎ
প্রাণীরা খাদ্যের জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীল। খাদ্যাভ্যাস অনুযায়ী এরা তৃণভোজী, মাংসাশী ও সর্বভুক। বাসস্থান অনুযায়ী এরা জলচর, স্থলচর, খেচর ও উভচর হয়।
খাদ্যশৃঙ্খল
পরিবেশে খাদ্যের জন্য জীবদের একে অপরের উপর নির্ভরশীলতার শৃঙ্খলই হলো খাদ্যশৃঙ্খল। যেমন: ঘাস → ফড়িং → ব্যাঙ → সাপ।
মেরুদণ্ডী ও অমেরুদণ্ডী
যাদের শিরদাঁড়া আছে তারা মেরুদণ্ডী (যেমন: মানুষ, মাছ) এবং যাদের নেই তারা অমেরুদণ্ডী (যেমন: কেঁচো, প্রজাপতি)।
অনুজীব
যেসব জীব খালি চোখে দেখা যায় না (যেমন: ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস), তাদের অনুজীব বলে। এরা উপকারী বা অপকারী উভয়ই হতে পারে।
প্রশ্নোত্তর
জীব ও জড়ের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।
- জীবের প্রাণ আছে, জড়ের প্রাণ নেই।
- জীব খাদ্য গ্রহণ করে, বৃদ্ধি পায় এবং বংশবিস্তার করে, কিন্তু জড় তা পারে না।
সালোকসংশ্লেষ কাকে বলে?
যে পদ্ধতিতে সবুজ উদ্ভিদ সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে, পাতার ক্লোরোফিলের সাহায্যে, জল ও কার্বন ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করে নিজের খাদ্য তৈরি করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে, তাকে সালোকসংশ্লেষ বলে।
খাদ্যশৃঙ্খল বলতে কী বোঝো? একটি উদাহরণ দাও।
পরিবেশে উৎপাদক থেকে শুরু করে বিভিন্ন খাদকের মধ্যে খাদ্য-খাদকের সম্পর্কের ভিত্তিতে যে শৃঙ্খল তৈরি হয়, তাকে খাদ্যশৃঙ্খল বলে। উদাহরণ: ঘাস → হরিণ → বাঘ।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় উদ্ভিদ ও প্রাণী কীভাবে নির্ভরশীল?
প্রাণীর জন্য উদ্ভিদ: সমস্ত প্রাণীই খাদ্যের জন্য এবং শ্বাসকার্যের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের জন্য উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল।
উদ্ভিদের জন্য প্রাণী: উদ্ভিদ পরাগমিলন, কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং পুষ্টির জন্য প্রাণীর ওপর নির্ভরশীল। এভাবেই তারা একে অপরের উপর নির্ভর করে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে।
ক্রিয়াকলাপ
কাজ ১: শূন্যস্থান পূরণ করো
ক) গাছের সবুজ পাতার ______ কণা খাদ্য তৈরিতে সাহায্য করে। (উত্তর: ক্লোরোফিল)
খ) যারা অন্য প্রাণীর মাংস খায়, তাদের ______ প্রাণী বলে। (উত্তর: মাংসাশী)
গ) কেঁচো একটি ______ প্রাণী। (উত্তর: অমেরুদণ্ডী)
ঘ) পরিবেশে শক্তির মূল উৎস হলো ______। (উত্তর: সূর্য)
কাজ ২: বাম দিকের সাথে ডান দিক মেলাও
| বাম দিক | ডান দিক |
|---|---|
| ১. জবা গাছ | (ক) অমেরুদণ্ডী |
| ২. ব্যাঙ | (খ) সর্বভুক |
| ৩. প্রজাপতি | (গ) গুল্ম |
| ৪. কাক | (ঘ) উভচর |
উত্তর: ১→(গ), ২→(ঘ), ৩→(ক), ৪→(খ)
কাজ ৩: বেমানান শব্দটি খুঁজে বের করো
ক) আম, বট, জবা, জাম → জবা (কারণ এটি গুল্ম, বাকিরা বৃক্ষ)
খ) গরু, ছাগল, বাঘ, হরিণ → বাঘ (কারণ এটি মাংসাশী, বাকিরা তৃণভোজী)
গ) মাছ, কেঁচো, সাপ, পাখি → কেঁচো (কারণ এটি অমেরুদণ্ডী, বাকিরা মেরুদণ্ডী)
কাজ ৪: নীচের তালিকাটি পূরণ করো
নীচে দেওয়া জীবদের তাদের খাদ্যাভ্যাস এবং মেরুদণ্ডের উপস্থিতি অনুযায়ী সঠিক ঘরে বসাও:
(গরু, বাঘ, কাক, কেঁচো, মাছ, প্রজাপতি, মানুষ, সাপ)
| জীবের নাম | খাদ্যাভ্যাস (তৃণভোজী/মাংসাশী/সর্বভুক) | মেরুদণ্ড (আছে/নেই) |
|---|---|---|
| গরু | তৃণভোজী | আছে |
| বাঘ | মাংসাশী | আছে |
| কাক | সর্বভুক | আছে |
| কেঁচো | সর্বভুক | নেই |
| মাছ | সর্বভুক/মাংসাশী | আছে |
| প্রজাপতি | তৃণভোজী | নেই |
| মানুষ | সর্বভুক | আছে |
| সাপ | মাংসাশী | আছে |
কাজ ৫: ছবি আঁকো ও প্রকল্প
একটি আদর্শ উদ্ভিদের ছবি এঁকে তার বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করো।
(মূল, কাণ্ড, পাতা, ফুল, ফল)
তোমরা খাতায় ছবিটি আঁকবে।
প্রকল্প (Project)
একটি ছোটো টবে একটি ছোলা বা মটরের বীজ পুঁতে দাও। প্রতিদিন জল দাও এবং সূর্যের আলোতে রাখো। এক সপ্তাহ ধরে লক্ষ্য করো বীজ থেকে কীভাবে চারাগাছ বের হয়। তোমার পর্যবেক্ষণ খাতায় লিখে রাখো।